ঢাকা,বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

কুতুবদিয়া ভূমি অফিসে দালালের দৌরাত্ম্য

বার্তা পরিবেশক ::  কুতুবদিয়া ভূমি অফিসে দালাল চক্রের দৌরাত্ম বেড়েছে। প্রতিদিন অফিসের আশপাশে এরা ঘোরাফেরা করে। অভিযোগ উঠেছে, খোদ তহসিলদারের আশ্রয়ে সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে অনৈতিক টাকা আদায়, দাবীকৃত টাকা না পেলে হয়রানিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়ায় এই দালাল চক্র। এতে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়ছেন প্রতিষ্ঠানটিতে সেবা নিতে যাওয়া লোকজন।

না প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, এই অফিসে দালার ছাড়া কোন কাজই হয় না। দালালের মাধ্যমে টাকা না দিলে ফাইল নড়ে না। শুধুমাত্র নামজারি করতেই ৩০-৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় দালাল চক্র। সরল বিশ্বাসে তাদের ফাঁদে পায় দেয় নিরীহ লোকজন। প্রতিদিন এ অফিসে লোকজন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তহসিলদার রিদুয়ান মোস্তফার নিজস্ব লোক হিসেবে পরিচিত দুই দালাল শরীফ ও রোদেল। তাদের টাকা দিলে সব কাজ সহজে হয়ে যায়। এমনকি সরকারি যেকোন গুরুত্বপূর্ণ নথিও সহজে বের করে আনা যায়। আর তাদের টাকা না দিলে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। নানা অজুহাতে বাতিল করে দেওয়া হয় আবেদন।

আলী আকবর ডেইলের বাসিন্দা মো: ইদ্রিস বলেন, ঘুষ-দূর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে কুতুবদিয়া ভূমি অফিস। সেবা নিতে গেলে মোটা অংকের টাকা চায় দালালরা। যতদিন এখানের তহসীলদারের বদলি হবে না, ততদিন আমি আমার জমির নামজারি করাবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, তহসীলদার আমার একটা প্রতিবেদনের জন্য তাঁর নিজস্ব লোক শরীফের মাধ্যমে দশ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। নামজারি করতে গেলেও দালাল লাগে। কোন নামজারির আবেদন রোদেল ও শরীফের মাধ্যমে না গেলে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তহসীলদার বাতিল করে দেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শরীফ ও রোদেল এর কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে তহসিলদার রিদুয়ান মোস্তফার সাথে মোবাইলে যোগযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগে কিছু লোক অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো। আমার নজরে আসার পরে তাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছি। এখন মোটামুটি দালালদের তৎপরতা বন্ধ আছে। এরপরও যদি এরকম দালালের কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দালালদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

এ বিষয়ে কুতুবদিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জর্জ মিত্র চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, কেউ এরকম দালালের বিষয়ে কোন অভিযোগ আমাকে জানায়নি। আমরা দালালের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি। স্থানীয় লোকজনের প্রতি অনুরোধ, জমি সংক্রান্ত কোন বিষয়ে জানার থাকলে সরাসরি আমার সাথে যোগাযোগ করুন। বাইরের কারও সহযোগিতা নেওয়ার দরকার নেই।

পাঠকের মতামত: